সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছাত্রীর সঙ্গে শাহিন উদ্দিন (৫০) নামে বিদ্যালয়ের এক সহকারী প্রধান শিক্ষকের অশালীন ফোনলাপ ফাঁস হয়েছে। বিষয়টি জানার পর ওই শিক্ষক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ‘হার্ট অ্যাটাক’ করে চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানা গেছে। ঘটনাটি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের। বুধবার (১২ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সোহরাব উদ্দিন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৫ সাল থেকে হাজী লাল মামুদ উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন শাহিন উদ্দিন। কিন্তু ১০ জানুয়ারি ফেসবুকে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয়ে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর গোপন ফোনলাপ ভাইরাল হয়। এতে ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রীকে কুরুচিপূর্ণ নানা ইঙ্গিত করেন এবং টাকার প্রভোলন দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেন। বিষয়গুলো মেয়েটি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও তিনি বারবার তাকে কুপ্রস্তাব দিতে থাকেন।
এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে বিদ্যালয়ের মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এতে বক্তারা বলেন, হাজী লাল মামুদ উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহীন উদ্দিনের সঙ্গে এক শিক্ষার্থীর যৌন হয়রানিমূলক অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ায় সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ অপরাধে শিক্ষক শাহীন উদ্দিনকে বিদ্যালয় থেকে চিরতরে বরখাস্ত করাসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানাই।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শাহিন উদ্দিন তাদের গণিত খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে পড়াতেন। কিন্তু তিনি কেন এমন করলেন তা তাদের বুঝে আসছে না। একজন শিক্ষক হয়ে এত জঘন্যতম একটা অপরাধ তিনি কীভাবে করলেন। ভাইরাল হওয়া অডিওটি ভালো করে তদন্ত করে দোষীকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বলেন, কষ্ট করে আমাদের সংসার চলে। ভেবেছিলাম মেয়েটি পড়ালেখা করে একটা সরকারি চাকরি করলে হয়তো ভাগ্যের চাকা ঘুরবে। কিন্তু বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমার মেয়ের পুরো ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিলেন। মামলা করার মতো ক্ষমতাও আমাদের নেই। আমি ওই শিক্ষকের কঠোর শাস্তির দাবি জানাই। তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়ে পড়ুয়া এক ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন ফোনলাপ ফাঁস হওয়ার কথা শুনে হার্ট অ্যাটাক করেছেন ওই শিক্ষক। বর্তমানে তিনি সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা ছিল না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে এবং তদন্তের মাধ্যমে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।