ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন ফোনালাপ ফাঁস হওয়ায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার বিকালে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সভাপতি নিগার সুলতানা কেয়া ও প্রধান শিক্ষক মো. সোহরাব উদ্দিনের যৌথ স্বাক্ষরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পরিচালনা কমিটির সদস্যগণের সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও প্রিন্টিং মিডিয়ায় ফোনালাপের বিষয়টি ফাঁস হওয়ায় বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. শাহীন উদ্দিনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো।
এছাড়াও শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা জানতে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করার জন্য বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন সদর উপজেলার হাজী জমিরুননূর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফররুখ আহমদ, শান্তিগঞ্জ মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম ও হাজী হাজী লাল মামুদ উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মমরুল ইসলাম।
হাজী লাল মামুদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান নিগার সুলতানা কেয়া বিতর্কিত শিক্ষককে বরখাস্তের সত্যতা নিশ্চিত করেন যুগান্তরকে বলেন, বৃহস্পতিবার বিকালে ম্যানেজিং কমিটির এক জরুরি বৈঠক থেকে আমরা ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যদিও আমরা এ পর্যন্ত কোনো অভিভাবক বা শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি তারপরও বিয়য়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচার হওয়ার প্রেক্ষিতে আমরা জরুরি ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, এছাড়া বিষয়টি অধিকতর তদন্তের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দুই সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তীতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্থায়ীভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমাদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, হাজী লাল মামুদ উচ্চবিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক এবং বিদ্যালয়ের বর্তমান সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহীন উদ্দিন ১৯৯৫ সাল থেকে এই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে আসছেন। তিন মাস আগে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে যৌন হয়রানিমূলক একটি ফোনালাপ হয় সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহীন উদ্দিনের। উক্ত ফোনালাপের অডিও রেকর্ড সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় ১০ জানুয়ারি সোমবার।
ফোনালাপে শুনা যায় ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীকে কুরুচিপূর্ণ নানা ইঙ্গিত করেন এবং টাকার প্রলোভন দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেন। শিক্ষার্থী বারবার শিক্ষকের এমন কথাগুলো এড়ানোর চেষ্টা করলেও তিনি তাকে কুপ্রস্তাব দিতে থাকেন। ফোনালাপ ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকাবাসী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বুধবার ওই শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে এলাকাবাসী, অভিভাবক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।